বাক্ ১০৭ : শামস রুবেল





কোরায়েশ
সুদূর আকাশে আমি সেই দ্বিখণ্ডিত চাঁদটাকে  প্রায়শই খুঁজি। 
এবং মার্কেট কিংবা লঞ্চ টার্মিনালে ঠিক আবু জেহেলের মতো 
আমি একজন উর্দিপরা অবিশ্বাসীকে নিয়ত হেঁটে যেতে দেখি
এই উর্বর  রাত্রিতে একটা খেজুর গাছের নিচে আমি তার জন্যই
অপেক্ষা করে আছি। কারণ, একজন অবিশ্বাসী ছাড়া  দ্বিখণ্ডিত
চাঁদটা দ্বিতীয়বার আর আসবে না!

স্নায়বিক

একটি ঘড়ির স্টোরহাউজে দশবছর আমি। একদিন
সবচেয়ে বিলাসবহুল ঘড়িটার সামনে পাঁচপাক ঘুরাতেই
পাঁচশ বছর ছিটকে গেলাম। তখন আমার মনে হলো যদি
কয়েকপাক পেছনে ঘুরাই কাঁটাটি; তবে নিশ্চয় নেরুদার কবিতা
সেলিব্রেশনে যোগ দিতে পারবো আমি। এই চিন্তা থেকে নড়ে
উঠতেই ততক্ষনাৎ বিকল হলো ঘড়িটি। আর আমি আরো
পাঁচশ বছর ঝুলে রইলাম বাতাসে। আমরা জানি ভালো 
জিনিসে পরিপূর্ণ একটি নরকের নাম  ঘড়ি। তরমুজের একটা 
বড়ফালিতে কামড় দিয়ে ফ্রেমের ভেতরে লক্ষ্মী আর গণেশের
ফটোগ্রাফটিই হলো সময়। এভাবে হাজার বৎসর ব্লকের পর যখন
ফিরে এলাম বাড়ি; দেখলাম, তখনও আমার ওজুর পানি গড়িয়ে
যাচ্ছে। যথাসম্ভব  কাঁদার প্রস্তুতি নিচ্ছে ছোট মেয়েটি!

কনটেস্ট
কথা ছিল ওই নর্তকী প্রতি মিনিটে একটি করে পোজ 
দেবে। চিত্রকরদের ওই অল্পসময়েরধ্যে সেই পোজ
কাগজেকলমে ধরে রাখতে হবে। ঘন্টায় নর্তকী ষাটটি
পোজ দিলো। বাহান্ননম্বর পোজে শ্বেতাঙ্গ নর্তকীর সুডৌল 
স্তনের মহার্ঘ দৃশ্যে চিত্রকরের মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। 
কৈশরে মায়ের স্নানঘরে যখন  সে দূরবীন ফেলেছিল।
তিপ্পান্ন নম্বর পোজে তাঁর প্রেমিকার, অতৃপ্ত মৌমাছির
মতো যখন সে চিৎ হয়ে ঘামতো। চুয়ান্ন নম্বর পোজে তার 
কন্যার... সঙ্গত কারণেই চিত্রকরদের চোখে একটা ম্যাগনিফাইং 
কাচ সাঁটা থাকে। বায়স্কোপের কলকাঠি ঠিকঠাক না ঘুরতেই সে
দেখে নিতে পারে ভূগোলবই অথবা পৃথিবীর মানচিত্র। পঞ্চান্ন নম্বর 
তুরুপের আগেই চিত্রকর ষাট নম্বর দৃশ্য এঁকে দীর্ঘক্ষণ...বসেছিলো!

                                        (চিত্রঋণ : James Abbott McNeill Whistler)

5 comments: